1970-12-09
By Agence France Presse
Page: 1
পশ্চিমে ভুট্টোর দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা
ঢাকা, ৮ই ডিসেম্বর (এ এফ পি)-পূর্ব পাকিস্থানের স্বায়ত্তশাসনধিকারবাদী আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্থানে ১৫৩টি অর্থাৎ ৯৯ শতাংশ আসন পেয়ে সর্ব-পাকিস্থানী ভিত্তিতে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করেছেন বলে বে-সরকারী সূত্রে খবর পাওয়া গিয়েছে।
শেখ মুজিবর রহমান-পরিচালিত আওয়ামী লীগ পূর্ব পাকিস্থানের পূর্ণ স্বায়ত্তশাসনাধিকারের জন্য ৬-দফা কর্মসূচী নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এই কর্মসূচী অনুযায়ী শুধু প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্রীয় ব্যাপারগুলি কেন্দ্রীয় সরকারের দায়িত্বে থাকবে।
ঘূর্ণিবাত্যানিত বিপর্যয়ের দরুণ পূর্ব পাকিস্থানে ৯টি নির্বাচনকেন্দ্রে ভোট গ্রহণ স্থগিত আছে।
পশ্চিম পাকিস্থানে মিঃ ভুট্টোর নেতৃত্বে পিপ্লস পার্টি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে এ পর্যন্ত ৮২টি আসন লাভে সমর্থ হয়েছে। পিপ্লস পার্টি মোট ১১৯টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। ইসলামিক সমাজতন্ত্রবাদের ধুয়া ছিল এই দলের নির্বাচনী-ধ্বনী।
অন্যান্য ২২টি দলও এই সাধারণ নির্বাচনের আসরে অবতীর্ণ হয়। মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত যেসব নির্বাচনকেন্দ্রে ভোট গণনা শেষ হয়, তাতে দেখা যায়, এইসব দল নির্বাচনের আসর থেকে বেপাত্তা হয়েছে। কয়েকটি দল পেয়েছে ৫ থেকে ১০টি আসন।
মৌলানা ভাসানী পরিচালিত পিকিংপন্থী জাতীয় আওয়ামী লীগ নির্বাচন বর্জন করে।
শেখ মুজিবর রহমান একটি নির্বাচন কেন্দ্রে ১৬৪০৭১টি ভোট লাভ করেন। পাকিস্থানে কোন রাজনৈতিক নেতাই এত অধিক সংখ্যাক ভোট পাননি। তিনি ঢাকা শহরের দুটি নির্বাচন কেন্দ্রেই বিপুল ভোটাধিক্যে জয়ী হন।
পূর্ব পাকিস্থানী সংবাদপত্রগুলি তাঁর এই সাফল্যকে পাকিস্থানের রাজনৈতিক ইতিহাসে একটি নতুন যুগের সূচনা বলে অভিহিত করেছে। পর্যবেক্ষকগণ পাকিস্থানের রাজনীতিতে একটি নতুন মোড়ের প্রত্যাশা করছে।
মুজিবর রহমান নিজে দুটি নির্বাচন কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়লাভ করেছেন। ঢাকা শহর নির্বাচন কেন্দ্রে মুজিবর প্রায় ১,৬৪,০৭১ ভোট পান। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিল মুসলিম লীগ দলভুক্ত খাজা খয়েরউদ্দিন মাত্র ৪০,০০০ ভোট পান। অপর কেন্দ্রে শেখ সাহেব ৯৬,০০০ ভোট বেশী পেয়ে জয়লাভ করেন।
অপরপক্ষে, পিপলস্ পার্টির নেতা, ৪২ বছর বয়স্ক আইনজীবী এবং পিকিং-এর সঙ্গে পাকিস্থানের দোস্তির অন্যতম ভিত্তি-রচয়িতা জুলফিকার আলি ভুট্টো নিজে ৫টি নির্বাচন কেন্দ্র থেকে জয়লাভ করেছেন। ভুট্টোর কাছে যাঁরা হেরে গেছেন, তাঁদের মধ্যে আছেন পাকিস্থানের প্রাক্তন প্রতিরক্ষামন্ত্রী এম এ খুরো। ইনি লারকানা নির্বাচন কেন্দ্র থেকে দাঁড়িয়েছিলেন। পূর্ব পাকিস্থানের ময়মনসিংহ থেকে পাকিস্থান ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা নুরুল আমিন জয়লাভ করেছেন। এখানে আওয়ামী লীগ প্রার্থী পরাজয় বরণ করেন।